Menu

কোমর ও অন্যান্য ব্যথা

বিভিন্ন ব্যথা ও তার আধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিশদে জানুন। ফোন করুন +৯১৯৩৩৯৬৫৭৮৫৭

মাথাব্যথা

মাথাব্যথার নানা কারন আছে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলো মারাত্মক নয়। 

মাথাব্যথার কারন

মাথাব্যথার নানা কারন আছে। সবচেয়ে প্রধান দুটি কারন হল মাইগ্রেন এবং টেনসন টাইপ হেডেক।

এছাড়াও আরও যেগুলি মাঝেমাঝেই দেখা যায় সেগুলি হলঃ

  • সারভাইকোজেনিক হেডেক,
  • ক্লাস্টার হেডেক,
  • ওকসিপিটাল নিউরালজিয়া।
  • অনেকেই মাথাব্যথা হলেই প্রথমেই ভাবেন ব্রেন টিউমার কিনা, এটা কিন্তু খুব কমই দেখা যায় এবং তার নিজস্ব কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্মণ আছে। 

মাইগ্রেন

মাইগ্রেন মানে শুধু মাথার যন্ত্রণা নয়, আরও কিছু। মাইগ্রেনকে অনেকে তুলনা করেন এপিলেপসির সঙ্গে। বারবার মাইগ্রেনের অ্যাটাক হওয়া মানে মস্তিষ্কের কিছু কোষের ক্ষতিসাধন। বছরে পাঁচবারের বেশি মাইগ্রেনের অ্যাটাক হলে, দীর্ঘমেয়াদি প্রতিষেধক খাওয়া বা বোটক্স জাতীয় ইঞ্জেকশন নেওয়া উচিত। সেই সঙ্গে চিহ্নিত করা উচিত মাইগ্রেনের অ্যাটাক কীসে হচ্ছে। এটা যেমন হতে পারে খালি পেটে থাকলে বা খাওয়ার অনিয়ম হলে, তেমনি আবার বিশেষ কিছু খাবার থেকেও। কারও আবার রোদে বের হলে এই অ্যাটাক হয়। মানসিক দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই অ্যাটাক ডেকে আনে। 

মাইগ্রেন নির্ধারণ পদ্ধতি

The International Headache Society মাইগ্রেনকে নির্ধারণ করার জন্য দু ধরনের নির্দেশিকা জারি করেছে।

  1. Migraine without aura (Common Migraine)
  2. Migraine with aura (Classic Migraine)

 

Migraine without aura / Common Migraine

  • মাথার একদিকে যন্ত্রণা।
  • দবদব করা।
  • যন্ত্রণার তীব্রতা কাজের গতিকে ব্যহত করে।
  • সিঁড়ি দিয়ে ওঠা বা শারীরিক পরিশ্রমে যন্ত্রণা বেড়ে যাওয়া।
  • তীব্র আলো/শব্দে অসহ্য মাথা যন্ত্রণা।

Migraine with aura / Classic Migraine

  • চোখে দেখার অসুবিধা।
  • শরীরের বা মুখের একদিকে অবশভাব বা ঝিনঝিন করা।
  • শরীরের যেকোনো একদিকে মাংসপেশির দুর্বলতা অথবা Mild Paralysis.
  • কথা বলতে অসুবিধা।

মাইগ্রেনের বিভিন্ন পর্যায়ঃ

গবেষণায় দেখা গেছে মাইগ্রেন অ্যাটাক নির্দিষ্ট চারটি পর্যায় হয়।

প্রথম পর্যায়ঃ

৬০% মাইগ্রেন আক্রান্তের মধ্যে এটি দেখা যায়। এই পর্যায়ে বিভিন্ন রকমের শারীরিক ও মানসিক লক্ষণগুলো দেখা যায়।

লক্ষণগুলি হলঃ

  • ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া।
  • ঠাণ্ডা লাগা।
  • অবসন্নতা
  • অস্থিরতা
  • ঝিমুনি ভাব
  • পিপাসা বেড়ে যাওয়া।
  • Urination বেড়ে যাওয়া।
  • খিদে কমে যাওয়া
  • ডাইরিয়া/কনস্টিপেশন
  • হাত বা পা ফুলে যাওয়া

দ্বিতীয় পর্যায়ঃ

২০% মাইগ্রেন আক্রান্তের মধ্যে এটি দেখা যায়। এটি মাইগ্রেন অ্যাটাকের ৫-২০ মিনিট আগে শুরু হয়, এবং এর স্থায়িত্ব থাকে ১ ঘণ্টা।

এই পর্যায়ের লক্ষণগুলি হলঃ  

  • চোখে দেখার আসুবিধা।
  • কোনও বস্তুর আকারের পরিবর্তন মনে হওয়া।
  • শরীরের বা মুখের একদিকে অবশ হয়ে যাওয়া।
  • পেশীর দুর্বলতা।
  • শরীরের একদিকে Mild Paralysis হয়ে যাওয়া।
  • কথা বলতে অসুবিধা।

তৃতীয় পর্যায়ঃ

অন্যান্য মাথা ব্যথার থেকে মাইগ্রেন হল অন্য রকমের মাথা ব্যথা।

লক্ষণগুলি হলঃ

  • মাথার একদিকে বা উভয়দিকেই বা চোখের চারপাশে ব্যথা।
  • খিদে কমে যাওয়া।
  • বমি বমি ভাব।
  • শারীরিক কাজকর্মে মাথার ব্যথা মাঝারি থেকে তীব্র হয়ে যাওয়া।
  • দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া/মুখ ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া।
  • চামড়ার ওপরে শিরা উপশিরা ভেসে ওঠা।
  •  মনোযোগের অভাব/হতাশা/ক্লান্তি।

চতুর্থ পর্যায়ঃ

মাইগ্রেন অ্যাটাক মাসে ২ বার করে হলে যে অক্ষমতা তৈরি হয় সেটা ৩ মাস বা তার বেশি স্থায়ী হয়। এক্ষেত্রে যে সব ওষুধ সাধারন ভাবে ব্যবহার করা হয় সেগুলি হল -   

Flunarizine, Propranolol, Methysergide,Amitriptyline, Carbamazepine, Divalproex sodium etc.

Intervention Pain Management:  দীর্ঘ সময়ের জন্য মাইগ্রেনের ব্যথা প্রতিরোধ করতে Scalp – এ Botulinum Toxin injection দেওয়া হয়।

 

সারভাইকোজেনিক হেডেক

সারভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস মাথার যন্ত্রণার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এক্ষেত্রে মাথার যন্ত্রণা ঘাড় ও মাথার পিছন দিক থেকে সাম্নের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। মাথা বা ঘাড় নিচু করে কাজ করা, যেমন – কম্পিউটারের কাজ ইত্যাদি এর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। ইন্টারভেনশনাল পেইন ম্যানেজমেন্ট দ্বারা এর স্থায়ী প্রতিকার সম্ভব।

অক্সিপিটাল নিউরালজিয়া

মাথা ব্যথার বিভিন্ন কারণের মধ্যে Occipital Neuralgia একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর রোগনির্ণয় হয় না অথবা এই রোগীদের চিকিৎসা হয় ' মাইগ্রেন ' হিসেবে। ফলস্বরূপ রোগীর নিরাময় হয় না এবং তাঁরা ভুগতেই থাকেন। এ ক্ষেত্রে রোগীদের মাথার যন্ত্রণা শুরু হয় মাথার পিছন দিক থেকে বা ঘাড় থেকে এবং যন্ত্রণা ছড়িয়ে পড়ে সামনের দিকে। কখনও কখনও মাথা ঘোরালে যন্ত্রণার অনুভূতি বেড়ে যায়। আমাদের মাথার পেছন থেকে  ওপর দিকে প্রবাহিত হয় Greater Occipital এবং  Lesser Occipital Nerve। এই নার্ভ গুলির উৎপত্তি ঘাড় থেকে ( c2 এবং c3)। ব্যথার উৎস এই নার্ভ গুলি থেকেই । সারভাইক্যাল স্পডাইলোসিস বা ঘাড়ে কোনও চোট আঘাত থেকে এই সমস্যা শুরু হতে পারে। ঘাড়ের x- ray বা CT – Scan এই রোগের ইঙ্গিত দিতে পারে, তবে নিশ্চিত হওয়া যায় Occipital Nerve Block করে। Occipital Nerve Block ব্যথা কমালেও রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি রাইজোটমি হল এর স্থায়ী সমাধান। কিছু ক্ষেত্রে পেসমেকারের মত একটি যন্ত্র মাথার পেছন দিকে মাথা এবং ঘাড়ের মধ্যবর্তি অঞ্চলে বসানো হয় এই সমস্যার স্থায়ী চিকিৎসার জন্য। 

কখন এটা মারাত্মক?

কিছু কিছু লক্ষ্মণ খারাপ। এগুলি চিনে নিন এবং এগুলি থাকলে, তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

  • বুড়ো বয়সের মাথাব্যথা।
  • মাথাব্যথার সাথে অন্যান্য লক্ষ্মণ যেমন অবশ ভাব, হাত/পায়ের প্যারালিসিস বা চোখে দেখার অসুবিধা। 
  • হঠাৎ করে শুরু হওয়া মাথাব্যথা।
  • কাজ করতে করতে শুরু হওয়া মাথাব্যথা। 
  • পুরানো মাথাব্যথার ধরন পরিবর্তন।
  • উত্তরোত্তর বাড়তে থাকা মাথাব্যথা।