Menu

কোমর ও অন্যান্য ব্যথা

বিভিন্ন ব্যথা ও তার আধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিশদে জানুন। ফোন করুন +৯১৯৩৩৯৬৫৭৮৫৭

ক্যান্সারের ব্যথা

ক্যান্সারের ব্যথা নিয়ে আলোচনার আগে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা দরকার। যেমন, ভারতে প্রতি বছর ১০ লাখ নতুন করে ক্যান্সার রোগ ধরা পড়ে। এদের মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগ রোগী ধরা পরেন বেশ অ্যাডভানন্সড অবস্থায়, যাদের ক্যান্সারের আসল চিকিৎসা ( যেমন – কেমোথেরাপি, অপারেশান, রেডিওথেরাপি) করা সম্ভব হয় না। এদের ব্যথার চিকিৎসারই শুধু প্রয়োজন হয়। এইসব অ্যাডভানন্সড ক্যান্সারের রোগীর ৪০ শতাংশ মারা যান অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে। অন্তত ৬০-৮০ শতাংশ রোগীর অভিযোগ, চিকিৎসা সত্ত্বেও তাঁদের ব্যথা ঠিকমতো কমছে না। অথচ বিদেশে পরীক্ষামূলক ভাবে দেখা গেছে, ৯০% - এরও বেশী রোগীর ব্যথা মুক্তির ব্যবস্থা করা যায়।প্রশ্ন হল আমাদের দেশে ঘাটতিটা কোথায়? কেন আমাদের দেশে ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই ব্যথা কমছে না বলে অভিযোগ করছেন? এর কারণ খুঁজতে গেলে প্রথমেই যেটা নজরে আসবে, সচেতনতার অভাব। স্বাস্থ্যকর্মী, এমনকি চিকিৎসকরাও সচেতন নন কীভাবে ক্যান্সারের ব্যথা কমানো যায় (৩০% রোগী ব্যথা কমানোর ওষুধে উপকৃত হন না, এঁদের  Interventional Pain Management  প্রয়োজন)। রোগী বা তাঁদের আত্মীয়-স্বজনও সচেতন নন কোথায় এবং কীভাবে ব্যথা কমানো যায়। সরকারি স্তরে উদাসীনতাও একটা বড় কারণ। যত সংখ্যক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক প্রয়োজন, তার ভগ্নাংশও নেই এই দেশে। অথচ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা সেভাবে করা হয় না। অন্য দিকে মরফিন জাতীয় ওষুধ যা একান্ত প্রয়োজনীয় ক্যান্সারের ব্যথায়, আইন-কানুনের বেড়াজালে তা প্রায় অমিল। 

ক্যান্সারের ব্যথায় চিকিৎসাঃ

এ ব্যপারে WHO –র নির্দিষ্ট নির্দেশিকা আছে। একে বলা যায় ব্যথা চিকিৎসার সিঁড়ি। প্রথম ধাপে আছে, মরফিন নয় এমন ওষুধ দিয়ে (যেমন প্যারাসিটামল) চিকিৎসা। দ্বিতীয় ধাপে, মরফিন শ্রেণীর দুর্বল ওষুধ, এর সঙ্গে প্রয়োজনে প্রথম ধাপের ওষুধ যোগ করা যেতে পারে। তৃতীয় ধাপে সরাসরি মরফিন বা ওই জাতীয় বেশী কার্যকর ওষুধ। চতুর্থ এবং শেষ ধাপে, Interventional Pain Management। ক্ষেত্রবিশেষে সরাসরি Interventional Pain Management – এর প্রয়োজন হতেই পারে, তবুও এ নির্দেশিকাই সারা পৃথিবীতেই মেনে চলা উচিত।

ক্যান্সারের চিকিৎসা এবং Interventional Pain Management

আমরা আগেই আলোচনা করেছি যে, অন্তত ৩০% ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের ব্যথার চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। সচরাচর দুই ধরনের “Intervention” কার্যকরী। প্রথমটি হল নিউরোলিসিস (ব্যথা পরিবাহী নার্ভগুলিকে স্থায়ীভাবে নষ্ট করে দেওয়া), এবং দ্বিতীয়টি Implantable drug delivery system (এখানে পেসমেকারের মতো একটি যন্ত্র শরীরের মধ্যে প্রতিস্থাপিত করে স্পাইনাল কর্ডের মধ্যে মরফিন জাতীয় ওষুধ ক্রমাগত ঢুকিয়ে দেওয়া হয়)। দ্বিতীয় চিকিৎসাটি বেশ ব্যয়বহুল হলেও প্রথমটির খরচ নামমাত্র, যা আমাদের মতো গরিব দেশে অত্যন্ত কার্যকর সাব্যস্ত হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, এই চিকিৎসাগুলি বেশ নিরাপদ। প্রথমটির পার্শ্বক্রিয়ার সামান্য সম্ভাবনা থাকলেও, দ্বিতীয়টির  পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া একেবারেই নামমাত্র।