Menu

কোমর ও অন্যান্য ব্যথা

বিভিন্ন ব্যথা ও তার আধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিশদে জানুন। ফোন করুন +৯১৯৩৩৯৬৫৭৮৫৭

ব্লগ পোস্ট

ব্যথা কমাতে গরম বা ঠাণ্ডা সেঁক

আমরা হামেশাই, ব্যথা কমাতে ঠাণ্ডা বা গরম সেঁক দিয়ে থাকি। কখন কোনটা দেওয়া উচিৎ, বা কোনটা কোথায় কেমনভাবে কাজ করে, আসুন আমরা তা জেনে নিই।

 

বেশীরভাগ রোগ, তা ক্ষুদ্র অথবা বড়,  নুতন বা ক্রনিক, দুর্ঘটনা বা সংক্রমণ,  সব রোগেই এক সাধারণ ফ্যাক্টর  হল ব্যথা। সংক্রমণের তীব্রতা  কমানো বা ট্রমার চিকিৎসা করাই শুধু নয়,  এগুলির পাশাপাশি, ব্যথা কমানোও  রোগীর সুস্থ হওয়ার পথে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। 

এর জন্য, ব্যথা ওষুধ ছাড়াও, সবচেয়ে সস্তা এবং সহজেই পাওয়া যায় সেই ব্যবস্থা হল  গরম এবং ঠান্ডা সেঁক। যদিও সব ক্ষেত্রে নয়, নিম্নে উল্লিখিত অবস্থাগুলিতে গরম এবং ঠান্ডা ব্যবহার করা যেতে পারে। 

গরম সেঁক:  কিভাবে দেওয়া হয়?

এগুলির মধ্যে কিছু সাধারণ পদ্ধতি যেমন হিট প্যাড, গরম স্নান, প্যারাফিন মোম সিস্টেম, গরম জলের বোতল, বা উষ্ণ তেল অন্তর্ভুক্ত। গরম সেঁক শরীরে রক্ত ​​সঞ্চালন এবং পুষ্টির সরবরাহ উন্নত করে। এগুলি জয়েন্ট এবং মাংস পেশীর  ব্যথা জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।

গরম সেঁক দেয়ার কিছু সাধারণ উপায় হল: 

1. সকালে একটি গরম শাওয়ার বা স্নান । এটি  জয়েন্ট এর আড়ষ্টতা  কমায়। 

2. 20 মিনিট পর্যন্ত ব্যথার যায়গায় গরম প্যাড প্রয়োগ করুন ।  চামড়া পোড়া এড়ানোর জন্য অনুকূল, সহনীয় তাপমাত্রা ব্যবহার করুন।

3. 15 থেকে ২0 মিনিটের জন্য ব্যথার জায়গাটি একটি আর্দ্র হিট প্যাডের সাথে মুড়ে রাখতে হবে।

4. উষ্ণ খনিজ তেল হাত এবং পায়ের শক্ত জয়েন্টগুলোতে প্রয়োগ করা যেতে পারে। এটি 15 থেকে 20 মিনিটের জন্য এটি রাখুন এবং তারপর ধুয়ে ফেলুন।

5. হাত ও পায়ের জয়েন্টের জন্য, উষ্ণ প্যারাফিন মোম  প্রয়োগ করা যেতে পারে। 

ঠাণ্ডা সেঁক ঃ কিভাবে? 

গরম সেঁক এর উল্টোদিকে  ঠান্ডা সেক, এটি অন্যভাবে কাজ করে।  এটি  ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাতে রক্ত ​​প্রবাহ কমিয়ে এবং  নার্ভের স্নায়বিক প্রবাহ কমিয়ে দেয়, ফলে ব্যথার  অনুভূতিকে হ্রাস করে। এটি তীব্র ব্যথার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে যেমন তাজা আঘাত এবং ব্যায়ামের  পর পাওয়া চোট আঘাতের ব্যথা। 

1. একটি মোড়ক এর মধ্যে আইস কিউব রেখে, তা 15 থেকে 20 মিনিটের জন্য ব্যথার জায়গায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। একটু  বিরতির পরে প্রয়োজন হলে এটি  পুনরাবৃত্তি করা যেতে পারে।

2. বিকল্পভাবে, একটি ভেজা গামছা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ মধ্যে রেখে  সেটি  15 মিনিটের জন্য ফ্রিজারে  ঢুকিয়ে রাখা এবং তারপর  এটিকে একটি ঠান্ডা প্যাক হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

3. চোট পাওয়া হাত বা পা টি  বরফ-জল এর মধ্যে ডুবিয়ে রাখা যেতে পারে।

4. কোল্ড জেল প্যাক ওষুধের দোকানে পাওয়া যায় - এইগুলি লিক হবে না, ঠাণ্ডা থাকবে এবং এটি সহজেই ব্যবহার করা যেতে পারে।

গরম এবং ঠাণ্ডা সেঁক দুটিই ব্যথায় আরাম দেয়; কিন্তু সাধারন নিয়ম হল, নুতন ব্যথায় ঠাণ্ডা এবং পুরানো ব্যথায় গরম সেক দিতে হবে। 

 

হাঁটু ব্যথার ব্যায়াম

হাঁটুর অষ্টিও আর্থরাইটিস সাধারণত উরুর পেশীকে দুর্বল করে দেয়। তাই উরুর পেশী মজবুত করা প্রয়োজন কারণ এই পেশী হাঁটুর গাঁটের কিছুটা চাপ নেয় এবং হাঁটুকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়। পেশী মজবুত করার জন্য কিছু ব্যায়াম অবশ্যই করতে হবে। মনে রাখতে হবে বেশিরভাগ বেল্ট মাংসপেশিকে দুর্বল করে এবং হাঁটুর ক্ষতি করে। এগুলি ব্যবহার না করাই উচিৎ।

নিম্ন লিখিত ব্যায়াম গুলি রোজ করতে থাকুন।

  1. Isometric Quadriceps exercise:

সোজা হয়ে পা সোজা করে বসুন। তারপর একটি তোয়ালে রোল করে হাঁটুর নিচে রেখে হাঁটু দিয়ে তোয়ালেতে চাপ দিন। এইভাবে ১০ সেকেন্ড থাকুন। শরীরের অন্যান্য অংশ স্বাভাবিক রাখুন এবং স্বাভাবিক ভাবেই শ্বাস-প্রশ্বাস নিন।  এইভাবে অপর পায়ে করুন। এই রকম ১০ বার করুন।

  1. Isometric Hamstring exercise:

প্রথমে সোজা হয়ে বসুন। পা দুটো অর্ধেক ভাঁজ করুন। এবার একটি পায়ের গোড়ালি দিয়ে মেঝেতে চাপ দিন। এইভাবে ১০ সেকেন্ড থাকুন। এরপর অপর পায়ে করুন। এটি ১০ বার করুন।

  1. VMO (Vastus medialis obliqus) strengthening exercise:

প্রথমে সোজা হয়ে বসুন। তারপর একটি বালিশ হাঁটুর নিচে রাখুন। তাহলে দেখা যাবে হাঁটুটি অর্ধেক ভাঁজ করা অবস্থায় আছে। এরপর হাঁটু দিয়ে বালিশের ওপর চাপ দিন। যে হাঁটু দিয়ে বালিশের ওপর চাপ দেবেন ওই পায়ের গোড়ালি সামান্য ওপরে উঠবে। এই ভাবে ১০ সেকেন্ড থাকুন ও এটি ১০ বার করুন।

  1. Quadriceps strengthening exercise:

প্রথমে একটি চেয়ারের ওপর বসুন। এরপর ধীরে ধীরে একটি পা সোজা করে ওপরে তুলতে থাকুন। পা টি সোজা অবস্থায় আসলে ১০ সেকেন্ড ধরে থাকুন। এরপর পা নিচে নামিয়ে নিন ও অপর পায়ে করুন। এই ভাবে ১০ বার করুন।

  1. Hamstring stretching exercise:

প্রথমে একটি পা ঝুলিয়ে ও একটি পা সোজা রেখে বসুন। তারপর ধীরে ধীরে সামনের দিকে ঝুঁকে যে পা টি সোজা অবস্থায় আছে সেই পায়ের আঙুল স্পর্শ করার চেষ্টা করুন। (তবে খেয়াল রাখবেন কোমর থেকে শিরদাঁড়া যেন সোজা অবস্থায় থাকে)। অপর হাত ওই পায়ের হাঁটুর ওপর রাখতে হবে যাতে হাঁটুর স্থিতি বজায় থাকে। এইভাবে ৩০ সেকেন্ড রাখুন এবং এটি ৩-৫ বার করুন।

  1. Gastrocnemius stretching exercise:  

প্রথমে একটি পা ঝুলিয়ে ও একটি পা সোজা রেখে বসুন। এরপর একটি তোয়ালে নিয়ে ফাঁস তৈরি করুন। এরপর সেই ফাঁসটি পায়ের পাতার সামনের দিকে রেখে তোয়ালের ২ দিক দুহাত দিয়ে ধরুন। এরপর পিছনের দিকে ঝুঁকে দুহাত দিয়ে তোয়ালে ধরে টানুন। এইভাবে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। এটি ৩-৫ বার করুন।