স্পাইনাল এন্ডোস্কোপি
ল্যাপোরোস্কোপি বা এন্ডোস্কোপি শব্দগুলি আজ আর আমাদের কাছে অজানা নয়। এখানে পেত বা শরীরের কোন একটি অংশে একটি ছোট্ট ছিদ্র করে একটি যন্ত্র ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এখানে থাকে একটি ক্ষুদ্র ক্যামেরা যার দ্বারা শরীরের ভিতরের সেই অংশটি আমরা বাইরে থেকেই সরাসরি দেখতে পাই। বেশ কিছু রোগ এই দিয়ে সারিয়েও তোলা যায়। যেমন গল-ব্লাডার অপারেশন আজকাল পেটকেটে প্রায় করাই হয় না, করা হয় এই এন্ডোস্কোপি পদ্ধতি দ্বারাই। এন্ডোস্কোপি পদ্ধতির উন্নতিসাধনের ফলে এখন শরীরের প্রায় সব অংশেই এই পদ্ধতির প্রয়োগ সম্ভব, তেমনি একটি অংশ হল মেরুদণ্ড। মেরুদণ্ডের ভিতরের অংশ ক্যামেরা দিয়ে সরাসরি দেখার নামই স্পাইনাল এন্ডোস্কোপি।
আমাদের মেরুদণ্ডের মধ্যে আছে একটি নালী যার মধ্য দিয়ে সুষুম্নাকাণ্ড প্রবাহিত হচ্ছে। সুষুম্নাকাণ্ড কয়েকটি আচ্ছাদন দিয়ে ঘেরা থাকে যার সবচেয়ে বাইরের আচ্ছাদনটির নাম হল ডুরা। এই ডুরা এবং মেরুদণ্ডের নালীর মধ্যকার জায়গাটির নাম হল এপিডুরাল স্পেস। সুষুম্নাকাণ্ড থেকে সমস্ত নার্ভই এই এপিডুরাল স্পেস হয়ে শরীরের সমস্থ অংশে ছড়িয়ে পড়ছে। স্পাইনাল এন্ডোস্কোপি পদ্ধতিতে এই জায়গাটিতে একটি ক্ষুদ্র ক্যামেরা ঢুকিয়ে দেওয়া হয় এবং এই জায়গা দিয়ে প্রবাহিত নার্ভগুলিকে সরাসরি দেখে নেওয়া যায়।
কোমরের ব্যথা নিয়ে আমরা আগেই আলোচনা করেছি যে নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে বের করা অনেক সময়ই প্রায় অসম্ভব। স্পাইনাল এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে ব্যথার কারণ খুঁজে বের করা অনেক সহজ হয়ে যায়। এছাড়াও নির্দিষ্ট কিছু সমস্যার চিকিৎসাও এর দ্বারা সম্ভব। যেমন ছোটখাটো টিউমার, অ্যাবসেস, এপিডুরাল অ্যাডহেসন ইত্যাদি সমস্যাগুলির ডায়াগনোসিস-এর সাথে সাথে একেবারে চিকিৎসাও করা সম্ভব।
অন্যান্য এন্ডোস্কোপির মতোই স্পাইনাল এন্ডোস্কোপিও যথেষ্ট নিরাপদ এবং পার্শ্বক্রিয়া একেবারে নগন্য। রোগীকে একদিনের বেশি হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় না এবং খরচও মেরুদণ্ডের যে কোনও অপারেশনের তুলনায় কম। সুতরাং স্পাইনাল এন্ডোস্কোপি কোমরের ব্যথার কারণ খুঁজে বের করতে এবং কিছু রোগের চিকিৎসায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।